বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ রাখার আগের দাবিতেই অনড় ছাত্রছাত্রীরা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে সব ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রজ্ঞাপনে হাইকোর্ট সোমবার স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরও আগের দাবিতেই অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথাও বলছেন তারা।
দুপুরে আদালতের আদেশের পর বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তারা চান না পুনরায় ছাত্র রাজনীতির সেই 'অন্ধকার দিনগুলো' ফিরে আসুক। এই সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনের সহযোগিতাও চান তারা।
এর আগে দুপুরে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেওয়া প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করে হাইকোর্ট। এর ফলে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি করতে আর কোনও বাধা থাকছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে এক বুয়েট শিক্ষার্থী তথা ছাত্রলীগ নেতা সোমবার সকালে হাইকোর্টে রিট করলে দুপুরে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।
তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই আদেশের ফলে আরো অনিরাপদ হয়ে উঠবে ক্যাম্পাস।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এখন অরাজনৈতিক পরিবেশে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা অনেক দিক থেকে অনেক ভালো আছে। আবার রাজনীতি ফিরে আসলে সেই আগের মতো ঘটনাগুলো ঘটতে পারে।"
এদিকে আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েটের শহীদ মিনার সংলগ্ন শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে পরবর্তী প্রক্রিয়া কী হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
বুয়েট উপাচার্য সত্য প্রসাদ মুজমদার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আদালতের রায় আমাদের শিরোধার্য। আমাদের যে আইনজীবী আছেন তার সাথে আলোচনা করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ীই আমাদের আগাতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, "বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া মানে নিপীড়নের রাজনীতি বা হত্যাকাণ্ডের রাজনীতিকে শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছিল।"
"প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে পারে না বলেই রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছিল। এটি থেকে নিষ্কৃতি চেয়েছিল শিক্ষার্থীরা", বলেন মি খান।