এলজিইডির প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ
এলজিইডির প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী নাবিল আহমেদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডির একটি রাস্তার কার্পেটিংয়ের চলমান কাজের অনিয়মের তথ্য সংগ্রহে গেলে ওই সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় এলজিইডির একটি পিচঢালাই সড়কের কার্পেটিংয়ের চলমান কাজে নিম্নমানের ও পুরোনো উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে–এমন তথ্যর ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলা টিভির প্রতিনিধি নয়ন দাস, দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান রনি ও দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনসহ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী তথ্য সংগ্রহে যান। তাঁরা গিয়ে দেখেন, রাস্তার কার্পেটিংয়ের জন্য বালু, ডাস্ট ও পাথরের সমন্বয়ে মেশিনের মাধ্যমে বিটুমিন মেলানো হচ্ছে। এই মেশিনের পূর্বপাশে রাখা হয়েছে রাস্তা থেকে তুলে আনা পুরোনো কার্পেটিংয়ের পাথর এবং পশ্চিম পাশে রাখা হয়েছে পুরোনো সেতুর ভাঙা পাথর।
রাস্তার কার্পেটিংয়ের জন্য এ ধরনের পুরোনো উপকরণ এখানে কেন রাখা হয়েছে?–গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নে ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বলেন, ‘কাজ কি বুঝেন? পড়াশোনা কতদূর?’ নাবিল বলেন, ‘আমার মন্ত্রী, সচিব আছে। জেলা এক্সেন (জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী) আমার গোনা লাগে না।’ একপর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেন তিনি।
এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল রোববার ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের পক্ষে দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন ডামুড্যা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বলেন, ‘রাস্তার কাজে অনিয়ম হচ্ছে–এমন সংবাদে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যাই। আমরা সেখানে বেশকিছু পুরোনো পাথর ভাঙা দেখে উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিলকে প্রশ্ন করি। এরপরই তিনি আমাদের ওপর চড়াও হন এবং একপর্যায়ে আমাদের ধাক্কা দেওয়া শুরু করেন। তিনি আমাদের পড়াশোনার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেন এবং বলেন গেট লস্ট।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বলেন, ‘তারা (সাংবাদিকেরা) পুরোনো মালামাল আর নতুন মালামাল মিলিয়ে ভিডিও করছিল। তারা কেন এটা করবে? তাদের আমি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করিনি। তাঁরাই আমাকে লাঞ্ছিত করেছে।’
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরাত হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক সুজন থানায় এসে একটি জিডি করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। সম্প্রতি ডামুড্যায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। অনিয়ম হবে আর সংবাদ সংগ্রহে গেলে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
প্রকাশিত রবিবার ২৫ মার্চ ২০২৪