• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    উত্তর পাহাড়তলীতে মশার উৎপাতে,অতিষ্ঠ জনজীবন, ব্যর্থ কর্পোরেশন

     


    সীতকালশেষ হওয়ার পর থেকেই চট্টগ্রামে বেড়েছে মশার উৎপাত নগরীর  ৯নং উত্তর পাহাড়তলী বিশ্ব কলোনী এলাকায় মশার উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে দিনের বেলা বা  সন্ধ্যায় মশার উৎপাতে বাহিরে দাঁড়ানো অসাধ্য হয়ে পড়েছে। বাসা বাড়িতেও টিকা যাচ্ছেনা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর দাবি করা হলেও মশার উপদ্রব থেকে  নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে ব্যর্থ হচ্ছে করপোরেশন। করপোরেশনের ছিটানো ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে জনমনে। অবশ্য খোদ সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাই স্বীকার করেছেন, দুই ধরনের ওষুধের মধ্যে এডাল্টিসাইটের কার্যকারিতা অনেক কম। এছাড়াও জনবল সঙ্কটের কথাও জানান তিনি।

    শীতের তীব্রতা কমার সাথে সাথে মশাগুলোও যেন আড়মোড়া ভেঙে এলাকাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই দোকানপাট রাস্তাঘাট এমনকি বাসাবাড়িতে স্থির থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষুব্ধ ৯ নং উত্তর পাহাড়তলীর বাসীন্দারা মশক নিধনে চসিক ব্যর্থ বলে জোড়ালো মন্তব্য  করেন।

     


    অনেকে জানান ঢাকঢোল পিটিয়ে লোক দেখানো কিছু এলাকায় ওষুধ ছিটানো হলেও পারো এলাকায় কোন ওষুধ ছিটানো হচ্ছেনা ফলে দিনের বেলায়ও মশার উপদ্রব যেমন সন্ধ্যা হলে কোথাও দাড়ানোর অবস্থা নেই। এই ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন নালা-নর্দমায় কিলবিল করছে মশার লার্ভা এবং পূর্ণাঙ্গ মশা।  স্থির পানিতে মশার প্রজনন অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে। নাগরিকদের কেউ কেউ করপোরেশনের ছিটানো ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের বক্তব্য হলো করপোরেশন যদি নিয়মিতই ওষুধ ছিটিয়ে থাকে, তাহলে মশার প্রজনন ঠেকানো যাচ্ছে না কেন?

    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীতে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। নগরীকে মশকমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা সবার নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ববোধ থেকে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া মশা-মাছির জন্মস্থান নালা-নর্দমা,  পুকুর, ডোবা-খাল, জলাশয়, খোপ-ঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়।
    কীটতত্ত্ববিদদের মতে, এমনিতেই নভেম্বর হতে মে মাস পর্যন্ত মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। এর উপর শীতকালে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নালা-নর্দমায় পানির স্থিরতা বেড়ে যায়। ফলে মশার প্রজনন হারও অন্য সময়ের তুলনায় বাড়ে। চিকিৎসকদের মতে বৃষ্টিপাতের আগে স্বাভাবিক কারণেই মশার উপদ্রব বাড়ে এবং এ সময় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চর্ম রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চলাকালে সিটি করপোরেশন কিছুটা তর্জন গর্জন করলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসার পর তা আবার থেমে যায়।

    এ দিকে মশার অস্বাভাবিক উৎপাতে  নাগরিকদের জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মশার উৎপাত থেকে বাঁচতে বাজারে থাকা বিভিন্ন কয়েল ও স্প্রে ব্যবহারেও নিস্তার মিলছে না উল্লেখ করে নাগরিকরা জানায়, করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা ব্যর্থ কর্পোরেশনের পক্ষ হতে মশক নিধনে কার্যকর উদ্যোগ না নেয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি আর্থিক ব্যয়ও বেড়েছে।
    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল  কাজমী  জানান, মশক নিধনে ‘এডালটিসাইড’ (পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী) এবং ‘লার্ভিসাইড’ (ডিম ধ্বংসকারী) নামে দুই ধরনের ওষুধ ছিটানো হয়। একই ওষুধ বছরের পর বছর ছিটানোর কারণে মশার অভিযোজন ক্ষমতা বেড়েছে। তবে এখনো লার্ভিসাইড বেশ কার্যকর। তিনি জানান, এডালটিসাইড ছিটানো হয় ফগার মেশিন দিয়ে। এতে এক ধরনের ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ফগিং করার কিছুক্ষণ মশাগুলো নিস্তেজ থাকলেও পরে আবার উড়ে বেড়াচ্ছে। তা ছাড়া ওষুধ প্রয়োগের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইড লাইন অনুযায়ী মানুষের ক্ষতি না হয় এমন মাত্রায় ওষুধ ছিটানো হয়।

    প্রকাশিত সোমবার ২৬ মার্চ ২০২৪