অনেক বেশি ক্ষতবিক্ষত হয়েও বাঙালি কখনো অধিকারের বিষয়ে আপোষ করেনি:মন্ত্রী তাজুল
বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বইয়ের মোড়ক উম্মোচনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানবাধিকার এবং ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ বহু আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, যুদ্ধ করেছেন, জীবন দিয়েছেন। যার জন্য আমরা অনেক বেশি ভুক্তভোগী। অনেক বেশি ক্ষতবিক্ষত হয়েও বাঙালি কখনো অধিকারের বিষয়ে আপোষ করেনি। আপোষ না করার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে গর্বিত। আজকে গ্লোবাল কমিউনিটি বলে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ গুলোর জন্য কেস স্টাডি।তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা জিন্দাবাদ বলে আমাদেরকে শোষন করতো, মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। মানুষকে অকাতরে হত্যা করেছে। তখন বাংলাদেশিরা বলেছে ‘জয় বাংলা।’ জয়বাংলা বলে আমরা পাকিস্তানিদের মোকাবেলা করেছি। জয়বাংলা আমার জন্মের শ্লোগান, আমাদের স্বাধীনতার শ্লোগান, আমাদের হৃদয়ের শ্লোগান। যাদের ‘জয়বাংলা’ বলতে লজ্জা করে আর জিন্দাবাদ বলতে গর্ববোধ করে তারা কি আমাদের স্বাধীনতার ত্রিশ লাখ শহীদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করার জন্য সুযোগ খুঁেজ নিচ্ছেন নাকি আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন ? এই প্রশ্নটি আপনাদের কাছে রেখে গেলাম। শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানস্থ সিনিয়রস ক্লাবে বিশ্বের ২২টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার বেগম রচিত “বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলজিআরডি মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঞা।এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আজকের বাংলাদেশ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের দেশ। এইদেশ অর্জন করার জন্য অনেক ত্যাগ-তিথিক্ষা স্বীকার করতে হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত এবং অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর ধরে দেশটাকে যখন পিছিয়ে দিয়েছিল তখন এদেশের মানুষের কোন খাদ্য ছিলনা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলনা, মানুষের মানবাধিকারসহ অন্যান্য কিছুই ছিলনা। তখনতো কেউ আমাদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে নাই।তিনি বলেন, যারা আজকে মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের কথা বলেন তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শাহ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাষ্টারকে হত্যা করা হয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা এবং আজকের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্ঠা করা হয়। এটাই কি ছিল তাদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার- প্রশ্ন রাখেন এলজিআরডি মন্ত্রী।এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে যখন ফিলিস্তিনে যুদ্ধ চলছে তখন আমাকে আর কাউকে বলে দিত হয়না মানবাধিকারের কথা। যখন সারা বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলার মতো মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায়না, তখন ‘বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বইয়ের মোড়ক উম্মোচন হল। গবেষণালব্দ এই বইয়ে মানবাধিকারের বহু সৃজনশীলতা ও সৃষ্টিশীলতা সম্মন্ধে লিপিবদ্ধ করা আছে।তিনি বলেন, এই বইয়ের লেখক প্রফেসর অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার বেগম আমাদের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মতো গর্বিত সন্তানের গর্বিত মাতা। পৃথিবীর ২২টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর রচিত বইয়ে নিশ্চয়ই আমরা অনেক দিক নির্দেশনা পাব। লেখকের অভিজ্ঞতার আলোকে জ্ঞানগর্ব এবং গবেষণালব্দ থেকে প্রণিত এই বইটি আমাদের জন্য নতুন কিছু করার জন্য সুযোগ এনে দিবে।বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ.এস.এম বজলুর রশিদ মিন্টু, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সেকান্দর চৌধুরী, মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জিনবোধি ভিক্ষু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবু মো. হাশেম, লেখকের সন্তান শিক্ষানুরাগী খালেদ মাহমুদ, অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার, স্বাগত বক্তব্য এডভোকেট এম এ নাছের চৌধুরী।
প্রকাশিত শনিবার ১৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রকাশিত শনিবার ১৪ অক্টোবর ২০২৩