• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    কবজি কাটার ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতেন তাঁরা: র‍্যাব

     

    এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্যদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও কবজি বিচ্ছিন্ন করতেন তাঁরা। এসব ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে ছড়িয়ে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতেন। এই চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। 


    হাতের কবজি কেটে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া গ্রুপের সাতজনকে গতকাল শুক্রবার থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত বাগেরহাট ও রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২ ও র‍্যাব-৬।


    র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আহমেদ খান (২২), মো. হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৪), মো. হানিফ হোসেন জয় (২৪), রমজান (২৩), মো. রাজু (১৯), মো. রাফিদুল ইসলাম রানা ওরফে রাফাত (২৩) ও তুষার হাওলাদার (২৩)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়।

    আজ দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি এই গ্রুপের সদস্যরা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আরমান নামের এক যুবকসহ বেশ কয়েকজনের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ভিডিও ধারণ করে টিকটকে ছড়িয়ে দেন।

    খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব সন্ত্রাসীর হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি ও মামলা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। তাঁরা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আরমান নামক এক যুবকের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ভিডিও ধারণ করেন। পরে টুইটারে তা ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট আরমান বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা (নং-১৫২) করেন।

    আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, আসামিরা রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। তাঁদের গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে। তাঁরা রাফাত, তুষার ও আনোয়ারের নেতৃত্বে বিগত চার-পাঁচ বছর এলাকায় নানা অপরাধ করছিলেন।

    র‍্যাব জানায়, পূর্বশত্রুতার জেরে আসামি তুষার আরমানের বাঁহাতে চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করেন এবং রাফাত ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়ে আরমানের ডান হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন করেন। ইতিপূর্বেও তাঁরা বিভিন্ন সময়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করতেন। পরে এসব নৃশংসতার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতেন।

    নির্বাচনকে সামনে রেখে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও মিরপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী বাহিনীরা সরব হচ্ছে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী ব্যবস্থা নেবে—এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘২০১৭ সালে র‍্যাব প্রথম কিশোর গ্যাং কালচারের সন্ধান পায়। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যারা এসব কার্যক্রম থেকে অনেকে সরে আসছে না। কিশোর গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িত এগারো শ সদস্যকে আওতায় নিয়ে এসেছি। সারা বাংলাদেশে কিশোর গ্যাং দমনে ও এর সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
    প্রকাশিত শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩