পাকিস্তানে কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাঁচটি গির্জা জ্বালিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা
পাকিস্তানে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন অবমাননার অভিযোগ এনে পাঁচটি গির্জা বা চার্চ পুড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরেও হামলা চালিয়েছে তারা। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ফয়সালাবাদের একটি শহরে এই ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম শহর ফয়সালাবাদ জেলার জারানওয়ালা এলাকায় গত বুধবার এই জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন আগামী ৭ দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সব ধরনের, সভা-সমাবেশ, মিটিং-মিছিলসহ গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, জারানওয়ালা শহরে সিনেমা চক এলাকায় দুই খ্রিষ্টান পরিবারের বসবাস। ঘটনার দিন ঠিক সেখানেই কোরআনের কয়েকটি পাতা পোড়ানো অবস্থায় পড়েছিল। স্থানীয় কয়েকজন সেটি দেখার পরপরই শহরজুড়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজিত জনতা সংগঠিত হয়ে চার্চ এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা চালায়।
তবে প্রাথমিকভাবে সাধারণ জনতা খুব বেশি আগ্রাসী ছিল না। বরং যখন ঘটনাস্থলে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের সদস্যরা পৌঁছায় তখনই পরিস্থিতি বিপজ্জনক মোড় নেয়। তাঁরা এসে বিভিন্ন মসজিদ থেকে সাধারণ জনতা সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানায় এবং শিগগিরই উত্তেজিত জনতা ওই দুই পরিবারের বাড়ির সামনে হাজির হয়ে বাড়ি দুটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। অবশ্য তার আগেই ওই দুই পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
এই ঘটনার পর শহরে আরও লোক সমাগম হতে শুরু করে এবং কয়েক শ লোক মিলে খ্রিষ্টানদের দুটি চার্চে হামলা করে। এর একটি চার্চ ক্যাথলিক এবং অপরটি স্যালভেশন আর্মি গোষ্ঠীর। এদিকে, জারানওয়ালা শহরের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন, এই দুটি চার্চ ছাড়াও আরও তিনটি চার্চেও আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, উত্তেজিত জনতা খ্রিষ্টানদের বেশ কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চালায়।
প্রকাশিত বুধবার ১৬ আগস্ট ২০২৩