ঢাকাকে ছিনতাইকারীমুক্ত করার ঘোষণা দিলেন ডিএমপি কমিশনার
রাজধানী ঢাকাকে ছিনতাইকারীমুক্ত না করা পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার পঙ্গু হাসপাতালে ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী প্রযোজক রাকিবুল হাসানকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদের বন্ধে রাজধানীতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঈদের আগেই অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করছিলাম। এর পরও দুঃখজনকভাবে বিষয়গুলো ঘটেছে। পুলিশ এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। রাজধানীকে ছিনতাইকারীমুক্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। এর জন্য আমাদের যা করা লাগে, যত পরিশ্রম করা লাগে আমরা করব।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যার ঘটনায় আমরা সবাইকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক রাকিবুল হাসানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ছুরি, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আরেক আসামি নজরদারিতে আছেন, তাঁকেও যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।’
সাংবাদিক রাকিবুল হাসানের ওপর হামলাকারী গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে একজন পাঠাওচালক, আরেকজন ইলেকট্রিশিয়ান। তাঁরা নিজেদের পেশার পাশাপাশি ছিনতাইয়ে জড়িত।
পুলিশের ডেটাবেইস অনুযায়ী ঢাকায় প্রায় ৬ হাজার ছিনতাইকারী আছে। ডেটাবেইসে তথ্য থাকলেও ছিনতাইকারীরা কেন বারবার ফিরে আসে—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘প্রত্যেকে গ্রেপ্তার হয়েছে বলেই আমাদের ডেটাবেইসে নাম আছে। আমরা প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। এরপর আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁরা জামিনে বের হয়ে আসেন। এখন আইন সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি না বা করণীয়র বিষয়ে অপরাধবিজ্ঞানী বা সমাজবিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন। আমাদের কাজ গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা।’
ছিনতাইকারীরা জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজ করছে, এখানে আইনের দুর্বলতা রয়েছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনের ফাঁকফোকর আছে কি না, অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন, আপনারা এসব বিষয়ে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারি না। কারণ আইন অনুযায়ী আমার যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, আমি তা প্রয়োগ করছি।’
ছিনতাইকারীর উৎপাত বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সবাই পুলিশকে দোষারোপ করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো গ্রেপ্তার করছি। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলো স্টেকহোল্ডারের মধ্যে পুলিশ ২০ নম্বরে। বাকি ১৯টা বাদ দিয়ে ২০ নম্বরের পুলিশ ধরে টানাটানি করলে তো হবে না।’
চিকিৎসাধীন রাকিবুল হাসানের বিষয়ে জানতে চাইলে পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তাঁর মাথার দুই জায়গায় ইনজুরি। দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে তাঁকে চিকিৎসা দিচ্ছি। আগামীকাল তাঁর দ্বিতীয় ধাপের অপারেশন হবে। তাঁর সেরে ওঠা শতভাগ না হলেও শতভাগের যত কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি।
প্রকাশিত মঙ্গলবার ০৪ জুলাই ২০২৩