২ থানার ওসিকে দায়ী করে চিরকুট, বিষপানে ঝাড়ুদারের আত্মহত্যার অভিযোগ
দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দায়ী করে চিরকুট লিখে পিরোজপুর সদর থানার ঝাড়ুদার আল মামুন (৪০) বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকালে বিষপান করলে রাতে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ করেছেন। তবে, এক ওসি এর সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন।চিরকুটে মামুন লিখেছেন, ‘আমি নিরদোশ (নির্দোষ), আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মো. হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মরার পর আমার লাশটা পোশমর্টাম (পোস্টমর্টেম) করবেন না। লাশটা আমার মামার বাড়ি দাফন করবেন। চিরকুটের বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, মামুনের লেখা চিরকুটের বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছেন। মামুন এ বিষয়ে আগে কখনো তাঁর কাছে অভিযোগ করেননি। চিরকুটের বিষয়টি তদন্ত করে কেউ দায়ী থাকলে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।মামুনের পরিবারের লোকজন জানান, মামুন জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের গাবগাছিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় চাকরি করার পর দুই মাস আগে ইন্দুরকানী থেকে পিরোজপুর সদর থানায় তাঁকে বদলি করা হয়। গতকাল সকালে বিষপানের পর রাতে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান মামুন। এদিকে মামুনের লেখা চিরকুট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে দুই থানার ওসির বিচার দাবি করে ইন্দুরকানীতে মামুনের বাড়ির এলাকায় বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন স্থানীয় লোকজন।বাড়ি থেকে যাতায়াত করে পিরোজপুর সদর থানায় গিয়ে মামুন অফিস করেন বলে জানান তাঁর স্ত্রী মরিয়ম। তিনি বলেন, ‘গতকাল সকালে বাইরে থেকে বিষপান করে বাড়িতে আসেন আমার স্বামী। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর হাতে চিরকুট দেখতে পাই। এরপর তাঁকে প্রথমে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় নেওয়ার পথে আমার স্বামী মারা যান।’মামুনের স্ত্রীর অভিযোগ, ইন্দুরকানী থানায় থাকার সময় ওসি এনামুল হক তাঁর স্বামীর ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। তাঁকে দিয়ে দিন-রাত অনেক কাজ করাতেন, অতিরিক্ত সময়ে কাজ করতে না চাইলে মামুনকে মারধর করা হতো। তাঁকে চুরির অপবাদ দেন ওসি এনামুল। এসব সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মামুন।বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে কল করে পাওয়া গেলেও চুরির অপবাদের বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক এনাম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ঝাড়ুদার মামুনের সঙ্গে সদর থানার কোনো কর্মকর্তা কখনো খারাপ ব্যবহার না করার কথা জানান পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে একাধিক কাজের লোক রয়েছেন, তাই কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না। এমন কোনো অভিযোগও মামুন আমার কাছে বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে করেননি।
প্রকাশিত মঙ্গলবার ০৬ জুন ২০২৩
প্রকাশিত মঙ্গলবার ০৬ জুন ২০২৩