রিজভীর পাশে দাঁড়ানো নিয়ে মারামারির মধ্যে মোবাইল ফোন ‘চুরি’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে আসা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সামনেই ঘটে এই ঘটনা। প্রায় তিন দফায় যুবদলের নেতা–কর্মীরা মারামারি করে পুরো কর্মসূচি স্থবির করে রাখেন।আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচিপূর্বক পথসভায় ব্যানারের সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে মারামারির সূত্রপাত ঘটে। মারামারির সময় নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের পকেট থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল চুরির অভিযোগ উঠেছে কর্মসূচির শুরুর দিকে মহানগর যুবদলের মূল কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদের অনুসারীদের সঙ্গে বিদ্রোহী যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফের অনুসারীরা মুখোমুখি হন। সভাস্থলে ব্যানারের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে প্রথমে তর্কাতর্কি ও পরে হাতাহাতি শুরু করে একপর্যায়ে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপ। শাহেদ ও জোসেফ গ্রুপের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় ওত পেতে থাকা চোরচক্র বিএনপির নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের পকেট থেকে মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। মারামারি চলাকালীন অবস্থাতেই সভাস্থলে হাজির হন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তাঁর আগমনের পর শান্ত হয় পরিস্থিতি। কিন্তু এর দশ মিনিট না গড়াতেই আড়াইহাজার বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতার সমর্থকদের মধ্যে আবারও মারামারি বেধে যায়।রিজভীর পাশে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারীরা আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারীদের ওপর হামলা করেন। প্রায় ১০ মিনিটের মতো মারামারি চলে রুহুল কবীর রিজভীর সামনেই। বারবার মাইকে তাঁদের শান্ত হতে বললেও কিছুতেই থামছিলেন না তাঁরা।পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় শহরের ডন চেম্বার এলাকায় আবারও সংঘর্ষে জড়ান নজরুল ইসলাম আজাদের অনুগামীরা। তাঁরা জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনির অনুগামীদের পিটিয়ে জখম করেন। অন্তত চার নেতা-কর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিতে দেখা যায়।মারামারির মাঝে মোবাইল হারান জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও নারায়ণগঞ্জ ফটো সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম সবুজসহ অনেকে। রাজীব বলেন, ‘প্রতিটি কর্মসূচিতেই উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা এসে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করে। সামান্য বিষয় নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত এদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া।’মনিরুল ইসলাম সবুজ আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি মানেই মোবাইল চুরি আর মারামারির ঘটনা। সংবাদ সংগ্রহ করতে এসে ক্ষতির মুখে পড়তে হলো। কর্মসূচি শেষে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘যাঁরা মারামারি করেছেন তাঁদের মুখ আমি চিনে নিয়েছি। আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা সহ্য করা হবে না।’মারামারি ও মোবাইল চুরির বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে সরকারি দলের এজেন্টরা প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। বড় দলের ভেতর এই ধরনের বিভাজন লাগানোর চেষ্টা নতুন কিছু নয়। আমরা এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি। আর যাঁরা মোবাইল হারিয়েছেন, তাঁদের বলব প্রত্যেকেই যেন থানায় জিডি বা অভিযোগ করেন। প্রতিটি কর্মসূচিতে একদল চোর মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিচ্ছে।’নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকেই বিষয়টি শুনেছি। আমরা দেখিনি এবং কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও দেয়নি।’
প্রকাশিত মঙ্গলবার ২৩ মে ২০২৩