• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের মামলা

     

    পটুয়াখালীর কলাপাড়া খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অর্থ ও সরকারি অনুদান আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

     তিনি ওই মসজিদের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। মামলায় মো. মাহবুবুর রহমানসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কার্যকরী পরিষদের সদস্য আব্দুল হান্নান ব্যাপারী বাদী হয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২৭ ধারায় পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই আদালতের বিচারক দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম এনামুল করিম গত বুধবার মামলাটি তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন।

     এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কার্যকরী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রাকিবুল আহসান, তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া নাসরিন, ওই মসজিদ কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ এবং কলাপাড়ার তখনকার সাব-রেজিস্ট্রার।মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ থেকে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠের নামে বরাদ্দ করা প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমান তালুকদার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন কলাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান উপজেলা প্রশাসনের সরকারি বরাদ্দ থেকে মসজিদের উন্নয়নকল্পে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩০ হাজার টাকা এবং মসজিদের ঈদগাহ মাঠের অসমাপ্ত অংশ সমাপ্তকরণ এবং মাঠ ফন্টাট সলিং প্রকল্পের নামে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু ওই টাকা মসজিদের অনুকূলে জমা না করে এবং কাজ না করে নিজেরা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় সংসদ সদস্যের অনুকূলে ২০০ টন খাদ্যশস্যের মধ্য থেকে মসজিদ ও ঈদগাহের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ ও সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য ৫০ টন খাদ্যশস্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার তৎকালীন বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিল। ওই বরাদ্দ করা খাদ্যশস্যের বিক্রীত অর্থ মসজিদে জমা না দিয়ে এবং কোনোরূপ উন্নয়নকাজ না করে আসামিরা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈদগাহ মাঠ উন্নয়নকল্পে বরাদ্দ করা দুই লাখ টাকা এবং পটুয়াখালী জেলা পরিষদ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমের আবাসস্থল ও ঈদগাহ মাঠ উন্নয়নের জন্য চার লাখ টাকা টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকাও তাঁরা নিজেরা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ ব্যাপারে জানতে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের নম্বর ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘আমি তো মসজিদ কমিটির সভাপতিও ছিলাম না, সম্পাদকও না। আমি কীভাবে আত্মসাৎ করব। মূলত নির্বাচন আসছে, তাই আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যাচার করছে।’কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসান বলেন, ‘আমি ওই মসজিদের ১০ বছর সভাপতি ছিলাম। ওখানে যত মিটিং হয়েছে তা কমিটির সদস্যদের নিয়ে। টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এই মামলায় নাকি আমার স্ত্রীকেও আসামি করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন, তাঁর এখানে সম্পৃক্ততা কি? মূলত এই উপজেলায় আমার ব্যক্তি ইমেজকে নষ্ট করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর জবাব দেব।
    প্রকাশিত রবিবার ০৫ মার্চ ২০২৩