• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    প্রবাসীর স্ত্রী ও প্রধান শিক্ষকের পরকীয়া, বাধা দেয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে লাঞ্চিতঃ

     

    আবু সাইদ চৌধুরী, (রানীনগর- নওগাঁ) নওগাঁর রাণীনগরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের পরকীয়া নিষেধ করায় কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব চাঁনকে লাঞ্চিত ও হয়রানির করার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক প্রবাসীর স্ত্রীর ছেলেকে পড়ানোর অজুহাতে বাড়িতে গিয়ে অবৈধভাবে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।

     এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান তাদের দুইজনকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে এবং তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বার বার নিষেধ করলে চেয়ারম্যানকে লাঞ্চিত করাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কালীগ্রাম ইউপি চেয়াারম্যান আব্দুল ওহাব চাঁন।

    সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব চাঁন জানান, আমি নির্বাাচত হওয়ার পর থেকে কালীগ্রাম ইউনিয়ন বাসীকে সুনামের সহিত সেবা দিয়ে আসছি। এরই ধারাবাহিকায় গত প্রায় ১ বছর আগে কালীগ্রাম ইউনিয়নের জয়সার গ্রামের এক মালেশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী আমাকে মোবাইল ফোনে জানায়- তার সাথে পাশ^বর্তী বড়চাপড়া গ্রামের এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক আছে মর্মে জয়সার গ্রামে কে বা কাহারা লিফলেট বিলি করেন। তার মৌখিক অভিযোগে আমি অভিযুক্ত যুবককে জয়সার গ্রামে ও প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে কথা বলতে নিষেধ করি। লিফলেট বিলি করার বিষয়ে প্রবাসী স্ত্রী বলেন তার স্বামীর পরিবারের দুইজন এ লিফলেট বিলি করেছেন। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে দুই ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তারা জয়সার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের সাথে প্রবাসী স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে জানায়। তখন আমি নিজে এবং অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির মাধ্যমে জাকির মাষ্টার এবং প্রবাসী স্ত্রীকে একে অপরের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে বলে নিষেধ করা হয়। কিন্তু তারা দুইজন কোন কর্ণপাত না করে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যায়। 

    ইউপি চেয়ারম্যান জানান, এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখে জয়সার গ্রামে এক কুলখানির অনুষ্ঠানে পরিষদের স্ট্রাফসহ আমি দাওয়াত খেতে যাই। দাওয়াত খাওয়ার পর ওই প্রবাসী স্ত্রীর বড় ভাই রফিকুল ইসলাম তার বোনের বাড়ীতে আমাদের ৩-৪ জনকে নিয়ে যায়। বাড়ীতে যাওয়ার কারনে প্রবাসী স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ককারী জাকির মাষ্টার ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে নিয়ে জয়সার গ্রামের লোকজনকে বিভিন্ন অশ্লীল কথা-বার্তা বলে। এতে আমার সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় আমি শিক্ষক জাকিরের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ওই অভিযোগ দেওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর মেয়ের শশুর আমাকে উক্ত অভিযোগটি প্রত্যাহার না করিলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। সে হুমকি দিলে আমি রাণীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। 

    চেয়ারম্যান আরও জানান, গত ০৫ মার্চ সন্ধ্যায় বেলঘড়িয়া গ্রামে হরিবাসর শ্রবন করিয়া খাঁনপুকুর বাজারে আসি। বাজারের এক গ্রাম্য ডাক্তারের দোকানে আসিলে প্রবাসীর স্ত্রী আমাকে হঠাৎ করে শারিরীক লাঞ্চিত করে এবং আমার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় জিডি করি এবং পরেরদিন ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিই। দ্রুত এসব ঘটনায় ওই শিক্ষক ও প্রবাসীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।

    এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, ওই শিক্ষকের সাথে আমার অবৈধ কোন সম্পর্ক নেই। ইউপি চেয়ারম্যান চাঁন আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে। সেই প্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান আমাকে ও ওই শিক্ষককে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অশ্লীল-মিথ্যা কথা চড়াচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে অতিষ্ঠ হয়ে চেয়ারম্যানকে জুতা দিয়ে মেরেছি।

    অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, আমার সাথে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর কোন সম্পর্ক নেই। ইউপি চেয়ারম্যান আমাদেরকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

    রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান চাঁন থানায় প্রবাসীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে জিডি করেছে। এছাড়া ওই প্রবাসীর স্ত্রীও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। দুই অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    প্রকাশিত শনিবার ১১ মার্চ ২০২৩