• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    উৎপাদন কমাচ্ছে রাশিয়া, হু হু করে বাড়ছে তেলের দাম

     

    বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো অপরিশোধিত রুশ তেল ও তেলজাত পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেওয়ার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মার্চ মাস থেকে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। 

    উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক ঘোষণা দিয়েছেন মার্চ থেকে প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাবে রাশিয়া। এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

    ইউক্রেনে হামলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জি৭ ও অস্ট্রেলিয়া রাশিয়ার তেল ও তেলজাত পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দিয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারির অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি হলো রাশিয়া। দেশটির তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণার পর  আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। এর ফলে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৬ ডলার।

    ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় রুশ তেলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো। যাতে করে যুদ্ধের মধ্যে তেল বিক্রি করে মুনাফা ও যুদ্ধে অর্থায়নে রাশিয়ার সামর্থ্য হ্রাস পায়।

    সর্বশেষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার পরিশোধিত তেলজাত পণ্য সমুদ্রপথে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ডিজেল। চলতি সপ্তাহ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। যেসব ক্রেতা এই নিষেধাজ্ঞা মানবে না তাদের ট্যাংকের বহর ও বিমার বাজার ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
    তেলের সর্বোচ্চ মূল্য বেঁধে দেওয়ার ঘটনায় পশ্চিমাদের সরবরাকৃত সামুদ্রিক বিমা, অর্থায়ন ও মধ্যস্থতাকারী ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। ৫ ডিসেম্বর থেকে রাশিয়ার সামুদ্রিক তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
    পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ মূল্যে যে কোনও চুক্তি নিষিদ্ধ করেছে।

    রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী নোভাক বলেন, আজ পর্যন্ত আমরা উৎপাদিত তেলের পুরোটুকু বিক্রি করছি। বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ মূল্য যারা পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মেনে চলবে তাদের কাছে আমরা তেল বিক্রি করব না।

    তিনি আরও বলেন, এই ক্ষেত্রে মার্চ থেকে প্রতিদিন ৫ লাখ ব্যারেল তেলের উৎপাদন স্বেচ্ছায় কমিয়ে আনবে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার পরও এত দিন পর্যন্ত উৎপাদিত তেলের ক্রেতা পেয়েছে মস্কো।

    এই খাতের কয়েকটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, বিভিন্ন  কোম্পানি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাজারো ট্যাংকারের একটি বহর তৈরি করেছে। এটিকে তথাকথিত ‘ডার্ক ফ্লিট’ বলা হচ্ছে। উচ্চমূল্যে অপরিশোধিত রুশ তেল বহন করবে এই বহর।
    এর আগে গত বছর এপ্রিলে বড় ধরনের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনে আক্রমণের ঘটনায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা জারির পর ৯ শতাংশ উৎপাদন কমানো হয়েছিল। কিন্তু পরে এশিয়ায় নতুন বাজার পেয়ে যায় দেশটি। গত বছর রাশিয়ার তেল উৎপাদন ২ শতাংশ বেড়ে প্রতিদিন ১০.৭ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছায়।

    প্রকাশিত শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩