‘আদালতে কাবিননামা দেখাতে পারেননি মামুনুল হক’
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। বিয়ের কথা বলে ডেকে এনে মামলার বাদীকে মামুনুল হক ধর্ষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও মামুনুল হক বিয়ের কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকালে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ধর্ষণ মামলার আসামি মামুনুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশের দুই এসআইসহ ১৫ জন সাক্ষী দিয়েছেন। সাক্ষীতে দুই কর্মকর্তা জানান- ঘটনার দিন ডিউটি অফিসারের তথ্যানুযায়ী তারা রয়েল রিসোর্টে যান। সেখানে মামুনুল হক ও মামলার বাদী ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ওই নারী পুলিশকে জানায়, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের কথা বলে ডেকে এনে ধর্ষণ করেছেন।
এ সময় আদালতে মামুনুল হকসহ তার পক্ষের আইনজীবীরা বিয়ের কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় ছয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ আট জনের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কোবায়েদ হোসেন ও বোরহান দর্জি সাক্ষী দিয়েছেন। তাদের সাক্ষীর সঙ্গে এজাহারের কোনও মিল খুঁজে পাইনি, অনেক এলোমেলো কথা উঠে এসেছে। আদালতে তারা দু’জন বলতে পারেননি ওই দিন তারা কেন মামুনুল হককে গ্রেফতার করেননি। বরং তারা বলেছেন সেদিন তাকে গ্রেফতার করার মতো কারণ ছিল না।
আদালতে মামুনুল হকের কাবিননামা দেখাতে না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে। আর আদালতে এখনও কাবিননামা দেখানোর সময় হয়নি। যথাযথ সময়ে এ বিষয়ে জবাব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে আদালতে আনা হয়। পরে সপ্তম ধাপে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মশিয়ার রহমানের আদালতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে নারী সঙ্গী নিয়ে অবস্থান করা অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রিসোর্টে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে নিয়ে যান। ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন তার সঙ্গে থাকা ওই নারী। কিন্তু মামুনুল হকের দাবি, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
প্রকাশিত সোমবার ০৩ অক্টোবর ২০২২