বরফ সংকট থাকার কারনে সাগরে যেতে পারেনি দের শতাধিক জেলে।
মো. শাকিল আহমেদঃ ইলিশ প্রজননের জন্য নদীতে মাছ ধরতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গতকাল মধ্যরাত থেকে। কিন্তু বরফের সংকটের কারণে সাগরে মাছ শিকারে যেতে পারেনি বরগুনার পাথরঘাটার দেড় শতাধিক ট্রলার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর এখনো পাথরঘাটার উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়া ট্রলারগুলো পড়েছে বরফের সংকটে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দেড় শতাধিক ট্রলারের হাজারো জেলের সাগর যাত্রা।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল তাঁদের। কিন্তু সাগরে যেতে না পেরে হতাশ তাঁরা। এদিকে নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণের জন্য অনেকই মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন।
মধুমতি ফ্রস্টের নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক রিয়াজ বলেন, ‘পাথরঘাটায় বরফের চাহিদা প্রচুর। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের এক দিন আগে থেকেই এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। এখনো স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। সাত দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় বরফের এমন সংকট তৈরি হয়েছে।’
সিয়াম আইস মিলের পরিচালক মোহাম্মদ সোহাগ বলেন, ‘এক ক্যান বরফ তৈরি হতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা। ঘূর্ণিঝড়ের পর বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যুৎ এলেও আবার সন্ধ্যায় চলে যায়। এরপর শুক্রবার ভোর পাঁচটায় আসে। এভাবে বরফ উৎপাদন করে সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পাথরঘাটা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম আব্দুস সালাম জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায় ও খুঁটি ভেঙে যায়। এতে সংযোগ চালু করতে একটু সময় লেগেছে। শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হবে।’
ট্রলার মালিক মো. মাসুম আকন বলেন, ‘১৫ দিনের জন্য চাল, ডাল, তেলসহ প্রায় ২ লাখ টাকার বাজার-সদাই ট্রলারে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে গত দুই দিন ধরে বরফের জন্য সিরিয়াল দিয়ে আছি। এ ছাড়া এই সংকটময় মুহূর্তে অনেকেই অতিরিক্ত দামে বরফ বিক্রি করেছে।’
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাওয়ার জন্য দেড় শতাধিক ট্রলার বরফকলের সামনে সিরিয়াল দিয়ে বসে আছে। যারা বরফ সংগ্রহ করতে পেরেছে তারা রাত ১২টার পর সাগরে ইলিশ শিকারের জন্য রওনা দিয়েছে।