ছাড়া পেয়ে ধানমন্ডিতে সম্রাট, বললেন শেখ হাসিনার কর্মী ছিলেন-থাকবেন
জামিনে কারামুক্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ছাড়া পেয়েই তিনি চলে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। পরে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজনীতি নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই, আমি সবসময় শেখ হাসিনার কর্মী ছিলাম, কর্মী হিসেবেই কাজ করে যাবো।
যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত হলেও শত শত নেতাকর্মীর কাছে এখনও প্রিয় সম্রাট ভাই। নেতার মুক্তিতে তারাও নেতার সূরে সুর মিলিয়েছেন। একই সঙ্গে শ্লোগান দিয়েছেন। শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে কাজ করতে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে সম্রাট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসেন। তার আগে দুপুরে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
সম্রাটের হাসপাতাল ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইউনিট প্রধান ডা. মো. রসুল আমিন। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেফতার যুবলীগের এ বহিষ্কৃত নেতাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সম্রাট এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
এর আগে গত সোমবার (২২ আগস্ট) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৬’র বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান। কিন্তু অসুস্থ থাকায় দুদিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন তিনি।
জামিনের ক্ষেত্রে সম্রাটকে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো- তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে; আদালতের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
সম্রাটের আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিনের মধ্য দিয়ে সব মামলায় জামিন পেয়েছেন সম্রাট।
জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ২৪ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সম্রাট। এদিন তিনি জামিনের আবেদনও করেন। কিন্তু আদালত সেটি নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার আগে ১৮ মে একই মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। তাকে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশও দেওয়া হয়।
পরে ওই মামলায় ১১ মে নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান সম্রাট। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। এর মধ্যে আরও তিন মামলায় জামিন পান বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা। মোট চার মামলায় জামিন পাওয়ায় ১১ মে বিএসএসএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সম্রাট।
রমনা থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন। আগের দিন ১০ এপ্রিল অর্থ পাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকার আলাদা দুটি আদালত থেকে তাকে জামিন দেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লা থেকে আটক করে র্যাব। জানা যায়, আটকে সময় সম্রাট অবস্থায় ছিলেন। তার কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
পরে তাকে ঢাকায় এনে কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সম্রাটের কার্যালয়ে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাওয়া যায়। পরে বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
প্রকাশিত শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২