হেফাজতের সহিংসতা: ৩ মামলায় জামায়াতের নায়েবে আমির গ্রেফতার
চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখানো হয়েছে। হাটহাজারী থানায় পুলিশের করা দুই মামলায় সোমবার (২৯ আগস্ট) তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিকালে শুনানি শেষে তাকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবাল।
এর আগে রবিবার (২৮ আগস্ট) পটিয়া থানায় করা পুলিশের এক মামলায় তাকে গ্রেফতার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখানো হয়। রবিবার পটিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশ্বর সিংহের আদালত তাকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলার কোর্ট পরিদর্শক জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় করা পুলিশের দুই মামলায় শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। সোমবার বিকালে শুনানি শেষে শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন বিচারক।’
হাটহাজারী মডেল থানার ওসির রুহুল আমিন বলেন, ‘২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ থেকে হাটহাজারীতে হামলা চালানো হয়। এ সময় মাদ্রাসার ছাত্ররা হাটহাজারী থানা ভবন, ভূমি অফিস ও ডাকবাংলোতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় শামসুল ইসলাম জড়িত ছিলেন এমন তথ্য থাকার কথা জানিয়ে দুপুরে দুই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পটিয়া আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) বদিউল আলম বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় পটিয়া থানায় করা একটি মামলায় রবিবার জামায়াত নেতা শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।’
পটিয়া থানার ওসি করিম চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ থেকে থানায় হামলা করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জামায়াত নেতা শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে ৩৭টি মামলা ছিল। ওসব মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। নতুন করে পটিয়া থানার একটি মামলায় রবিবার তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। সোমবার হাটহাজারী থানায় করা পুলিশের দুই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতের আদেশের পর তাকে আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
এর আগে ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতারের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অন্তত ৪০টি মামলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার এই সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভের জেরে হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষ হয়। হাটহাজারীর ঘটনায় সাড়ে চার হাজার জনকে আসামি করে ১০টি মামলা করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। পাশাপাশি দুটি মামলা করে পটিয়া থানা পুলিশ।