ময়মনসিংহে উদ্বোধনের অপেক্ষায় সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প

মোঃ ফজলুল হক ভুঁইয়া, ময়মনসিংহ:- ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ‘সুতিয়াখালি ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। অক্টোবরে এ প্রকল্পের পরীক্ষামূলক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে আরো ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এজন্য এ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৮শ কোটি টাকা। একই সঙ্গে বৃহৎ এ প্রকল্পটি দেশের সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে একটি মাইলস্টোন হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

বর্তমান সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলার সুতিয়াখালির চরাঞ্চলে ‘সুতিয়াখালি ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প’ হাতে নেয়া হয়।

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ও সরকারি তদারকিতে পিডিবির একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্ববধানে ১৭৪ একর জমি ওপর প্রায় ৮শ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশ বান্ধব এ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ এখন প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে।

২০১৪ সালে প্রকল্পের যাত্রা শুরু হলেও অনেক চড়াই-উৎরাই শেষে ২০১৬ সালের শেষ দিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাথে ‘বাস্তবায়নচুক্তি’ এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাথে ‘বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি’ স্বাক্ষরের পর ২০১৭ সালে ‘সুতিয়াখালি ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুত প্রকল্প’ নামে বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হয়।

প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩০ জুনের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কাজে জড়িত চীনা প্রকৌশলীরা নববর্ষের ছুটিতে দেশে যাওয়ায় পর করোনা দুর্যোগের কারণে সময়মতো ফিরে না আসায় সোলার প্লেট বসানো ও সংযোগ প্রদানের কাজ বিলম্বিত হয়।

এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের অধিনে অফিস ভবন, ব্রহ্মপুত্র নদী শাসন বাঁধ, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সোলার প্লেট বসানো, দশটি বক্স ট্রান্সমিশনে সংযোগ প্রদান, সাব-স্টেশনসহ ১৩২ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ, কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রীড লাইন পর্যন্ত চার কিলোমিটার আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন এবং এক কিলোমিটার ওভারহেড ট্রান্সমিশন সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এখন ইকুইপমেন্ট টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের পর পরীক্ষামূলক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু এবং গ্রিডে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।

এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ মো. শফিকুল ইসলাম পিএসসি জানান, সরকারের সব নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের সুফল পাবে ময়মনসিংহের মানুষ। এখানে সৃষ্টি হয়েছে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থান। আশা করছি শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০