প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ প্রণোদনার টাকা এখনো পায়নি অনেক উপকারভোগীরা
মোঃ ফজলুল হক ভুইঁয়া, ময়মনসিংহঃ- ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় হতদরিদ্র পরিবারের ৭ হাজার ৩শ ১৯ জন তালিভুক্তির সিংহভাগ উপকারভোগী এখন পর্যন্ত বিগত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার অর্থ ২৫০০ শ টাকা পানননি বলে তালিকাভুক্ত উপকারভোগীরা জানিয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম-তারিখ, সিম রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন তথ্যের গরমিল থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তারা।
জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় ময়মনসিংহ নান্দাইল উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া ৭ হাজার ৩শ ১৯জন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তার জন্য তালিকাভুক্ত করেন স্থানীয় জন-প্রতিনিধিরা। তালিকাভুক্ত উপকারভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খাম-খেয়ালীপনার কারণে তারা সুবিধা থেকে বঞ্চাত হচ্ছেন। এ ছাড়া সংশোধিত তালিকায় নাম নেই, এমন অনেক তালিকাভুক্ত উপকারভোগীও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে দেওয়া ২ হাজার ৫০০ টাকা এখনও পাননি।
করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদুল ফিতরের আগে তাদের স্ব-স্ব মোবাইলের মাধ্যমে টাকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও এখনও অনেকে তাদের এ টাকা পাননি। ফলে এসব জনগোষ্ঠির মাঝে চরম অসন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আব্দুল জানান, মুজিববর্ষে সারা দেশে ৫০ লাখ পরিবারের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তার প্রদান কর্মসূচির উপকারভোগীর তথ্য সংশোধনের জন্য সংশোধনী তালিকা এসেছে। ৬৩৮১জনের তারা টাকা পাচ্ছেন না। নামের তথ্য গরমিল ও বিকাশ নাম্বার সঠিক না থাকায় টাকা প্রাপ্তির সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংশোধিত নতুন তথ্য প্রেরণের জন্য নির্দেশনা এসেছে এবং আমরা তালিকা ও বিভিন্ন ভূলভ্রান্তি সংশোধন করে আবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা আরো জানায়, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম তারিখ, সিম রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন তথ্যের গড়মিল থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এসব উপকারভোগী।
এ পরিস্থিতিতে উপকারভোগীদের তথ্য নতুনভাবে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত সংশ্লিষ্ট জন-প্রতিনিধিরা তথ্য প্রেরণের কাজ করছেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখনও টাকা পাননি এমন অনেকেই জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, সিম রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য তথ্য ঠিক থাকলেও তাদের মোবাইলে এখনও টাকা আসেনি। এমনকি সংশোধিত তালিকায়ও তাদের নাম নেই।
এ পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রণোদনার টাকা প্রাপ্তিতে শংকিত ও হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন তালিকাভুক্ত এসব উপকারভোগীরা। আচারগাঁও ইউনিয়নের ধরগাঁও গ্রামের শামিম মিয়া জানান, তালিকায় নাম থাকা সত্বেও আমি টাকা পাই নি। এব্যাপারে নান্দাইল ইউপির চেয়াম্যান আনোয়ারুল হক জানান তালিকাভুক্ত হতদরিদ্রের তাঁর মোবাইল সীম অন্যের নামে রেজিষ্ট্রেশন থাকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল নাম্বার দেওয়ায়।
এসব ভুলত্রুটির কারণে করোনাকালীন দূর্যোগের মাননীয় প্রধামন্ত্রীর দেওয়া ২৫০০শত টাকা অনেকেই পান নি। তিনি আরো জানান, তালিকা ভুক্ত কেউ টাকা না পেলে তারা আগামীতে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমেও টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে তালিকাভুক্ত কোনো উপকারীভোগী বঞ্চিত হবেন না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এপর্যন্ত তালিকাভুক্ত থেকে ১৯শ ৩২জন টাকা পেয়েছেন। তিনি আরো জানান, তালিকাভুক্ত যেসব উপকারভোগীর তথ্যে ভুল আছে তা সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে। কোনো উপকারভোগী যাতে অর্থ বঞ্চিত না হন, সে বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা মতো কাজ করা হচ্ছে।
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০